“বাইন্যান্স কি এবং কিভাবে কাজ করে? বাংলাদেশে বাইন্যান্সের বৈধতা, হালালতা, একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং বিটকয়েন ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এই সম্পূর্ণ গাইডে। ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের আগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জেনে নিন।”
বাইন্যান্স কি?
বাইন্যান্স হলো বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম। এটি ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা, ট্রেডিং, স্টেকিং এবং নানা ধরনের আর্থিক সেবার সুযোগ দেয়।
চাংপেং ঝাও ২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন, এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ হিসেবে পরিচিত। সহজ ব্যবহারযোগ্যতা, দ্রুত লেনদেন এবং নিরাপত্তার জন্য এটি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
বাইন্যান্স কিভাবে কাজ করে?
বাইন্যান্স মূলত বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং জোড়া (যেমন BTC/USDT, ETH/BUSD) অফার করে, যা ব্যবহারকারীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী লেনদেন করতে পারেন। ট্রেডিং ছাড়াও এটি ডিপোজিট, উইথড্রল, লোনিং, স্টেকিং, এবং ডেরিভেটিভস ট্রেডিং-এর মতো বেশ কিছু সেবা দিয়ে থাকে।
বাইন্যান্স-এর প্রধান কার্যপ্রণালী:
1. অর্ডার প্লেসমেন্ট: বাইন্যান্সে ব্যবহারকারীরা মার্কেট, লিমিট বা স্টপ লস অর্ডারের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনতে ও বিক্রি করতে পারেন।
2. ট্রেডিং ফি: প্রতিটি লেনদেনের জন্য একটি ছোট ট্রেডিং ফি কাটা হয়, যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কমানো যেতে পারে।
3. ফান্ডিং অপশন: বাইন্যান্সে বিভিন্ন পেমেন্ট মেথড যেমন ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড অথবা অন্যান্য ক্রিপ্টো থেকে তহবিল জমা দেওয়া যায়।
ফেসবুক বিজনেস আইডিয়া: কাপড় ও পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা শুরু করুন
বাইন্যান্সে একাউন্ট খোলার নিয়ম
বাইন্যান্সে একটি একাউন্ট খুলতে হলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
1. সাইটে বা অ্যাপে প্রবেশ করুন: প্রথমে Binance.com বা Binance অ্যাপ ডাউনলোড করে প্রবেশ করুন।
2. রেজিস্ট্রেশন করুন: ইমেল বা ফোন নম্বর দিয়ে একটি একাউন্ট রেজিস্টার করুন এবং পাসওয়ার্ড সেট করুন।
3. কেওয়াইসি (KYC) সম্পূর্ণ করুন: নিজের পরিচয়পত্র (জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ইত্যাদি) এবং ছবি দিয়ে KYC ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করুন। এটি মূলত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।
4. ফান্ড ডিপোজিট করুন: আপনার একাউন্টে ফান্ড ডিপোজিট করে ট্রেডিং শুরু করুন।
বাইন্যান্স কি বাংলাদেশের বৈধ?
বাংলাদেশে বাইন্যান্স বা ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন সম্পূর্ণরূপে বৈধ নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংকে সমর্থন করে না এবং এটিকে অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সির মজুদ বা হোল্ডিং আইনত নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জে (যেমন বাইন্যান্সে) কিছু ব্যবহারকারী ব্যক্তিগতভাবে বিনিয়োগ করেন, যা এখনও একটি ধূসর এলাকায় পড়ে।
বাইন্যান্স কি হালাল?
বাইন্যান্স বা যেকোনো ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং হালাল কিনা, তা ইসলামিক ফাইনান্স বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্কিত। সাধারণত, যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং প্রকৃত সম্পদের উপর নির্ভরশীল হয় এবং সুদের সংযোগ না থাকে, তাহলে অনেকে এটিকে হালাল হিসেবে মনে করেন। তবে ফরেক্স ট্রেডিং বা ফিউচারস ট্রেডিং, যেখানে লিভারেজ বা সুদ যুক্ত থাকে, তা সাধারণত ইসলামিক দৃষ্টিকোণে হারাম হিসেবে বিবেচিত।
সেরা ফ্রিল্যান্সিং অ্যাপ ২০২৪ | নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং অ্যাপ
বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ?
বিটকয়েন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বৈধ নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এটি সমর্থন করে না এবং বিটকয়েনসহ অন্য সব ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সিকে মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে। ফলে বাংলাদেশে বিটকয়েন কেনা-বেচা অবৈধ বলে গণ্য করা হয়।
বাইন্যান্স ট্রেডিং বই ও শিক্ষামূলক রিসোর্স
বাইন্যান্সে নতুন বা অভিজ্ঞ ট্রেডারদের জন্য বেশ কিছু শিক্ষামূলক রিসোর্স ও গাইড উপলব্ধ রয়েছে। Binance Academy নামে বাইন্যান্স নিজেই একটি শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে, যেখানে নতুন ট্রেডাররা ট্রেডিং এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারেন। ট্রেডিং বই এবং অন্যান্য টিউটোরিয়াল কন্টেন্ট ট্রেডারদের আরও উন্নতি করতে সহায়ক।
এই গাইডটি পড়ার পর আশা করা যায়, বাইন্যান্সে ট্রেডিং শুরু করার আগে আপনি বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবগত হবেন। তবে মনে রাখবেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং শুরু করার আগে অবশ্যই যথেষ্ট গবেষণা করা প্রয়োজন।
আরো পড়ুন